বিশ্বকাপে টিকে থাকতে মেক্সিকোর বিপক্ষে জয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল আর্জেন্টিনার জন্য। কিন্তু কোনোভাবেই মেক্সিকোর রক্ষণভাগ ভাঙতে পারছিল না মেসিরা। অনেক চেষ্টার পর ম্যাচের ৬৪ মিনিটে লিওনেল মেসি গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। কেন তিনি বিশ্বসেরা, আরও একবার মাঠের খেলায় প্রমাণ দিলেন লিওনেল মেসি।
যে ম্যাচটি ছিল আর্জেন্টিনার বাঁচামরার, যে ম্যাচে মাথার ওপর পাহাড়সমান চাপ; সে ম্যাচেই জ্বলে উঠলেন সাতবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা।
মেক্সিকোর বিপক্ষে বলতে গেলে একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে জয় এনে দিলেন সময়ের সেরা এই ফুটবলার। ২-০ গোলের জয়ে নিজে করলেন একটি, এক গোলে রাখলেন অবদান।
শনিবার রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে এই জয়ের সঙ্গে বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়েছেন মেসি। নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। আসুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক মেসির রেকর্ডগুলো…
> পাঁচটি বিশ্বকাপে অ্যাসিস্ট করা ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় এখন মেসি।
> শনিবার ম্যাচের ৬৪ মিনিটে গোল করেন এবং ৮৭ মিনিটে অ্যাসিস্টে গোল করান মেসি। ২০০৬ সালে সার্বিয়ার বিপক্ষে নিজের বিশ্বকাপ অভিষেকেও গোল আর অ্যাসিস্ট করেছিলেন মেসি।
১৯৬৬ সালের পর বিশ্বকাপের এক ম্যাচে গোল এবং অ্যাসিস্ট করা সর্বকনিষ্ঠ এবং বয়োজ্যেষ্ঠ ফুটবলারের দুটি রেকর্ডই এখন মেসির দখলে।
> শনিবার রাতে নিজের গোলটি বক্সের বাইরে থেকে করেছেন মেসি। বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে বক্সের বাইরে থেকে করা এটি তার চতুর্থ গোল। ১৯৬৬ সালের পর কেবল একজনই (রিভেলিনো, ৫ গোল) এই টুর্নামেন্টে মেসির চেয়ে বেশি গোল করতে পেরেছেন বক্সের বাইরে থেকে।
> মেক্সিকোর বিপক্ষে দলকে জিতিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন মেসি। বিশ্বকাপের মঞ্চে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরা (২০০২ সাল থেকে এই পুরস্কার) হওয়ার রেকর্ডে এখন তিনি যৌথভাবে শীর্ষে রোনালদোর সঙ্গে (৭টি করে)। ৬ বার ম্যাচসেরা হয়েছেন আরিয়ান রোবেন।
মেক্সিকোকে হারানোয় নকআউট পর্বে যাওয়ার ক্ষেত্রে আর্জেন্টিনার সামনে রয়েছে একাধিক উপায়। গ্রুপ সি’তে আর্জেন্টিনা ছাড়াও রয়েছে পোল্যান্ড, মেক্সিকো ও সৌদি আরব।
মেসিদের গ্রুপে এক জয় ও এক ড্র নিয়ে শীর্ষে রয়েছে পোল্যান্ড। এক জয় ও এক পরাজয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে আর্জেন্টিনা। একই সমীকরণ নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে সৌদি আরব, আর চতুর্থ স্থানে থাকা মেক্সিকোর অর্জন ১ পয়েন্ট।
আর্জেন্টিনা সবচেয়ে সহজেই নকআউট পর্বে যেতে পারবে যদি শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের সঙ্গে জিততে পারে। যদি পোল্যান্ডের সঙ্গে ড্রও করে তাহলেও সুযোগ থাকবে আর্জেন্টিনার। তবে তখন অনেক কিছুই নির্ভর করবে সমীকরণের উপর। পোল্যান্ডের সাথে মেসিরা ড্র করলে তাকিয়ে থাকতে হবে মেক্সিকো-সৌদি আরব ম্যাচের ফলের ওপর। সেই ম্যাচ অমীমাংসিতভাবে শেষ হলে গোল পার্থক্য ভালো থাকায় পরের পর্বে চলে যাবে আর্জেন্টিনা।
আর্জেন্টিনা-পোল্যান্ড ম্যাচ ড্র হলে দুই দলের পয়েন্ট হবে যথাক্রমে ৪ ও ৫। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় রাউন্ডে চলে যাবে লেভানদোভস্কির দল। অন্যদিকে গ্রুপের শেষ ম্যাচে মেক্সিকোকে আটকে দিতে পারলেই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠবে সৌদি আরব। আর্জেন্টিনা হারলে এবং মেক্সিকো জিতলে পরের পর্বে চলে যাবে দ্বিতীয় দেশটি। আবার সৌদি আরব যদি মেক্সিকোকে হারিয়ে দেয়, তাহলেও আর্জেন্টিনা ছিটকে যাবে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে পয়েন্ট খোয়ালে।